সিফিলিস
(Syphilis)

সিফিলিস
রোগের জীবানুর নাম ট্রেপনোমা প্যালিডাম। সিফিলিস আক্রান্ত কারো সাথে যৌন মিলনে এই
রোগ হয়ে থাকে, তবে রোগীর রক্ত গ্রহনের মাধ্যমেও এই রোগ হয়। আবার
গর্ভাবস্থায় মায়ের সিফিলিস থেকে থাকলে সন্তান সেখান থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে
ভূমিস্ট হয়ে থাকে। সাধারণত আক্রান্ত কারো সাথে যৌন মিলনের ২-৪ সপ্তাহ পরে এই রোগের
লক্ষন গূলো দেখা দেয়, তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ৩ মাস পর্যন্ত দেরী হতে পারে।
এটা
শুরুতে পুরুষের যৌনাঙ্গের মাথায় বা শীস্নে হাল্কা গোলাপী বর্ণের একটা দাগ হিসেবে
দেখা দেয়। ধীরে ধীরে এটা বড় হয়ে ফোস্কা বা ঘায়ের মতো হতে থাকে। রোগ শুরুর ২ মাসের
মধ্যেও যদি চিকিৎসা না নেয়া হয় তবে যৌনাঙ্গের ঘা দ্রুত ছড়াতে থাকে এবং সেই সাথে জর
ও মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয় এবং শরীরের বিশেষ করে কুচকীর গ্রন্থিগুলো বড়
হয়ে যেতে থাকে। এ রোগ পায়ু-পথ, ঠোট, মুখ, গলনালী, খাদ্যনালী
এমনকি শ্বাসনালীতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, অবশ্য এটা নির্ভর করে
কোন পথে যৌনাচার করা হয়েছিলো তার উপড়।
এ
অবস্থায় ও যদি কেউ চিকিৎসা নিতে অবহেলা করে তবে রোগটি খুবই জটিল আকার ধারন করে।
তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এটি সুপ্ত অবস্থায় চলে যায় এবং বছর দুয়েক সুপ্ত থাকার পরে
ভয়াবহ রুপে দেখা দেয়। এভাবে চিকিৎসাহীন থেকে গেলে পুরুষাঙ্গের মাথায় বিশাল আকৃতির
বিশ্রী ক্ষত বা ঘা হয়, অবস্থা আরো জটিল হতে থাকে এবং এক সময় এই রোগ হৃদপিন্ড
এবং মস্তিস্কে ছড়িয়ে পরে বা নিউরোসিফিলিস (Neurosyphilis) হয়, যা
রোগীকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।
বিভিন্ন
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে (যেমন VDRL, TPHA) এই রোগটি সনাক্ত করা
যায়। প্রাথমিক পর্যায়েই সিফিলিসের চিকিৎসা করানো উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
পেনিসিলিন শ্রেনীর ঔষধ সেবন অথবা ইঞ্জেকশন গ্রহনে এই রোগ পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়।
স্বামী-স্ত্রী বা যৌনসঙ্গী উভয়েরই চিকিৎসা নেয়া উচিত অন্যথায় এই ইনফেকশন সঙ্গীর
কাছ থেকে আবার হতে পারে।
গনোরিয়া
(Gonorrhoea)
যৌন
বাহিত এই রোগটি নাইজেরিয়া গনোরি নামক একপ্রকার ব্যকটেরিয়ার কারনে হয়।
আক্রান্ত
ব্যক্তির সাথে মিলনের ৮-১০ দিন পর এই রোগের লক্ষন গুলো দৃষ্টিগোচর হয়।
পুরুষের
যৌনাংগ দিয়ে পুজ (Pus) বের হওয়া, প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই
রোগের উপসর্গ।
মহিলাদের
যোনিপথ, মূত্রনালী ও গুহ্যদারে এই রোগ হয়। যদিও অনেক মহিলার
ক্ষেত্রেই রোগটি কোনো লক্ষন প্রকাশ করেনা তবে প্রসাবে জ্বালাপোড়া, যোনিপথে
স্রাব আসা (Vaginal discharge) এসব উপসর্গ নিয়ে অধিকাংশ রোগী
চিকিৎসকের দারপ্রান্তে উপস্থিত হয় ।
সমকামীরা
এই রোগে গুহ্যদারে আক্রান্ত হয়।
যৌনাংগ
থেকে নিঃসৃত নির্যাস বা পুজ থেকে স্মেয়ার (Smear) বা
স্লাইড তৈরী করে অথবা কালচার (Culture) করেও এর জীবানু সনাক্ত
করা হয়।
চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী পেনিসিলিন বা সেফালোস্পোরিন জাতীয় অসুধ গ্রহনে এই রোগ ভালো হয়ে
যায়।
সঠিক
সময়ে চিকিতৎসা না করালে পুরুষের শুক্রাশয় (Testes), মহিলাদের
ডিম্বাশয় (Ovary), ডিম্বনালী এসব স্থানে প্রদাহ হয়ে রোগী বন্ধাত্ব বরণ করতে
পারে।
মায়ের এইরোগ থাকলে শিশু অপথাল্মিয়া নিওন্যাটারাম (Opthalmia neonataram) নামক চোখের প্রদাহ নিয়ে জন্ম নিতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত টি লিখুন :