সন্তান মানুষের জীবনে কতটা গুরুত্ব রাখে,এবং সন্তানের অভাব পৃথিবীর অন্য
কোন সম্পদ দ্বারা অপূরণীয় তা একমাত্র যার সন্তান নেই সে ভূক্তভূগিরাই
জানেন।যাদেরকে আল্লাহ তাআলা সন্তান দান করেছেন তারা সবাই চান তার সন্তান
যেন শুসন্তান হিসেবে গড়ে উঠে। সন্তান লালন পালনে কিছু নির্দেশনাঃ কুরআনে
কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ-হে ঈমানদ্বারগণ তোমরা নিজেদেরকে এবং
তোমাদের পরিবার কে জাহান্নামের অগ্নি থেকে রক্ষা কর।(তাহরীম-৬)
নিজেদের রক্ষা করবো আল্লাহর আদেশ মেনে নিষেধ থেকে বিরত থেকে।আল্লাহ
তাআলার অসন্তুষ্টি ও শাস্তিযোগ্য কাজ থেকে তাওবা করে। আর পরিবার ও
সন্তানদের রক্ষা করবো তাদের প্রকৃত লালন পালন,আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত
করে,তাদের কে আল্লাহর আদেশ নিষেধ মানতে বাধ্য করে। আপনার সন্তানকে শুসন্তান
হিসেবে গড়ে তুলতে নিম্নের দিকনির্দেশনা গুলো কাজে আসবে।
#-আপনি যেহেতু তাদের পিতা সুতরাং আপনার সন্তানরা সর্বপ্রথম যাকে
অনুস্মরণ করবে সে হলেন আপনি।আপনাকে তারা একজন বাবা,শিক্ষক,মুরুব্বী হিসেবে
অনুস্মরণ করবে।সুতরাং আপনি আপনার ব্যবহারে,চরিত্রে,চলাফেরায় তাদের জন্য
আদর্শ শিক্ষনীয় হয়ে উঠুন।
#-ঘরে সাধারণত শিশুরা যা দেখে যা শুনে এর বড় একটি প্রভাব পড়ে তার
ভবিষ্যত জীবনে।তাই আপনার ঘরের পরিবেশকে তৈরী করুন ইসলামী,ঈমানী,কুরআনী
পরিবেশে।
#-সন্তানকে শিশুকাল থেকেই কুরআনের হিফজ এবং কুরআন শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত
করুন।শিশুকালই তার সোনালি সময় হিফজুল কুরআনের।এরপর সম্ভব হবেনা।
#-শিশু বয়স থেকেই সন্তানকে সময় দেয়া।বাবা কে যেন সে বন্দু ভাবে।তার
সব সমশ্যা যাতে সে আপনার সাথে শেয়ার করতে পারে।এবং তাকে খারাপ সংস্পর্শ
থেকে দূরে রাখা।কথয় আছে সৎসঙ্গে স্বর্গবাস,অসৎসঙ্গে সর্বনাশ।রাসুল সাঃ
বলেন-মানুষ তার বন্দুর ধর্মের উপর(বন্দু যেমন সেও তেমন)সুতরাং তোমরা দেখ কে
কাকে বন্দু বানায়।(আহমদ,আবু দাউদ,তিরমিযী)
#-সন্তানদের চিন্তাধারা কে উচ্চ পর্যায়ে রাখা।এতে তার জ্ঞান ও মেধার বিকাশ হবে।নিম্নমুখিতা তাকে নিম্নেই রাখবে।
#-সন্তানের লেবাস পোষাক চলা ফেরায় সব কিছুতে যেন ইসলামি ভাবধারা বজায়
থাকে।মেয়েলি ভাব মেয়েদের সাথে উঠাবসা শিশু কাল থেকেই যেন দৃষ্টি দেয়া
হয়।
#-আল্লাহ,আল্লাহর রাসূল এর ভালবাসা শিশু বয়স থেকেই তাদের অন্তরে স্থাপন করা।
#-দ্বিনী এলেম শিক্ষার প্রতি শিশুকাল থেকেই তাদের মনে আগ্রহ তৈরি
করা।এবং এতে পার্থিব কোন উদ্দেশ্য যেন মনে না আসে তার প্রতি লক্ষ্য রাখা।
#-সন্তানের জন্য সদা আল্লাহর নিকট দোয়া করা।বারবার বেশি বেশি করে দোয়।পিতা মাতার দোয়া সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
#-তাদের আদর স্নেহ দেয়া।ভালবাসা দিয়ে কাছে রাখা।মানুষের সামনে তাদের
ভুলত্রুটি আলোচনা না করা।একান্তে বসে শাষন করা।অল্প দোষে অধিক শাস্তি না
দেয়া। আল্লাহ আমাদের সবার সন্তানদের মুত্তাক্বীদের ইমাম বানান।আমীন।
জন্মের পূর্বেই সন্তানের উপর ইহসানঃ এক বেদুঈন তার সন্তাদের একদিন ডেকে
বললেন আমি তোমাদের উপর তোমাদের শিশুকালে তোমরা বড় হওয়ার পর এবং তোমদের
জন্মের পূর্বেও ইহসান করেছি।সন্তানরা বললো,আপনার ছোটবেলায় ও বড়বেলার
ইহসান বুজতে পারলাম।কিন্তু জন্মের পূর্বের ইহসানটা কিভাবে? উত্তরে বেদুঈন
বললো আমি তোমাদের জন্য এমন মা বাচাই করেছি যাকে নিয়ে দ্বিনী ভাবে এবং
পার্থিব ভাবে তোমাদের লজ্জিত না হতে হয় ।তাই আসুন আমরা যারা বিয়ে করিনি
তারা এ ব্যপারটির দিকে দৃষ্টি দেই।এবং বাবারা তাদের সন্তানদের বিয়ে করানোর
সময় ও লক্ষ্য রাখি। রাসূল সাঃ বলেছেনঃ-মেয়ের চারটি দিক দেখে তাকে বিয়ে
করা হয়।
১-সম্পদ দেখে
২-বংশ দেখে
৩-রূপ দেখে
৪-দ্বীন দেখে (আল্লাহভীরুতা)
সবশেষে আল্লাহর রাসুল বললেন যদি প্রথম তিনটি না থাকে শুধু চতুর্থ গুনটি
থাকে তবে তাকে বিয়ে করে সৌভাগ্যবান হও তোমার হাত ধুলোমলীন হোক। নবজাতকের
নামের গুরুত্বঃ নামের ব্যপারটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।রাসূল সাঃ কয়েকজন
সাহাবীর নাম বড় অবস্থায় পরিবর্তন করেছেন।যেমন এক সাহাবীর নাম অগ্নির
অর্থে হওয়ায় তিনি বললেন তুমিতো সব জ্বালিয়ে রাখ করে দেবে।তাই কারো
সন্তানের নাম ভাল অর্থবোধক না হলে তা পরিবর্তন করে নেয়াই শ্রেয়।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবার সন্তানদের আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে তোলার তৌফীক্ব দিন।আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত টি লিখুন :